
দক্ষিণ আফ্রিকা যাবো না বলে দিয়েছিলেন। পরে সিদ্ধান্ত বদলে সবার শেষে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া, বাকিদের তুলনায় কম দিন অনুশীলন করা। তবু মাঠে সবাইকে পেছনে ফেলে ব্যাট-বল হাতে জ্বলে উঠে দল জেতানো পারফরম্যান্স দেখিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পাওয়া। সাকিব আল হাসান আবার প্রমাণ করলেন, ভালো খেলার জন্য তার ভেতরের তাগিদ ও ইচ্ছেটাই যথেষ্ট।
যার প্রমাণ শুক্রবারের অসাধারন ব্যাটিং করে ৬৪ বলে ৭৭ রানের ইনিংস। অথচ এই সাকিব ঘরের মাঠে আফগানদের সঙ্গে সেভাবে জ্বলে উঠতে পারেননি। কেন পারেননি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছিলেন। সংবাদ মাধ্যমে সাকিব জানিয়েছিলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ তিনি উপভোগ করেননি।
তার ভাষায়, ‘আমার নিজেকে এখন প্যাসেঞ্জার মনে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মানসিক অবস্থায় নেই আমি।’ তার ভেতরে যে প্যাসেঞ্জার থেকে ড্রাইভিং আসনে বসার ইচ্ছে, সেটাই সাকিবের ভালো খেলার পেছনের মূল রহস্য। অর্থাৎ মন থেকে ভালো খেলার ইচ্ছে জাগ্রত হলেই তিনি ব্যাট ও বল হাতে জ্বলে উঠে পারফরম করতে পারেন।
দল জেতানো পারফরম্যান্স করে ম্যাচসেরাও হতে পারেন। সত্যিকারের ‘চ্যাম্পিয়ন’ সাকিবের দল জেতানো ব্যাটিং দেখে ভক্ত-সমর্থকরা উদ্বেলিত। তবে যিনি প্রায় সারা বছর সাকিবকে খুব কাছ থেকে দেখেন, সেই জাতীয় দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন কিন্তু সাকিবের এমন ব্যাটিং দেখে একদমই বিস্মিত নন।
কথা বলে বোঝা গেলো, সুজন খুব ভালোই জানেন, সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানে ফেরা মানে ভালো খেলা ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র। যা তার দৃঢ় সংকল্পর ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। সুজনের মূল্যায়ন, ‘সাকিব আসলে মানসিকভাবে খুব শক্ত মনের ছেলে। কোনোরকম ভয়ডর কখনও কাজ করে না ভেতরে।
ওর ক্রিকেট জ্ঞান প্রচুর। কখন কী করতে হবে, কোন সময়ের অ্যাপ্রোচ কেমন হবে? এসব খুব ভাল বোঝে। সাকিব কেন বিশ্বসেরা ক্রিকেটার? শুক্রবারের ম্যাচই তার প্রমাণ।’ টিম ডিরেক্টর আরও জানান, ‘সাকিবের সম্পর্কে আসলে আমার আলাদা করে কিছু বলার নেই।
সাকিব থাকাটা কতটা সুবিধা, কতটা স্বস্তির- তা আরও একবার প্রমাণ হলো শুক্রবার। সবার পরে দলের সঙ্গে যোগ দিলেও, দক্ষিণ আফ্রিকায় এসে সাকিব প্রাণপন চেষ্টা করেছে, অনুশীলনে বাড়তি ঘাম ঝড়িয়েছে।’ সবাই সাকিবের ব্যাটিং নিয়ে কথা বলছেন।
তবে সাকিবের বোলিংয়েরও বেশ প্রশংসা করেছেন সুজন। তার মূল্যায়ন, ‘সাকিবের বোলিংটা খালি চোখে আহামরি মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে উইকেট পায়নি, ১০ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ম্যাচের বিচারে এটি অনেক ভালো বোলিং। প্রোটিয়াদের চেপে বসতে দেয়নি। হাই স্কোরিং গেম অনুযায়ী বরং কম রানই দিয়েছে।’
Leave a Reply