
দেশের তরুণ পেসার মেহেদি হাসান রানার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ভাবছি অনেক দিন ধরে কথাগুলো বলব। আজ আমার বলতেই হবে, কারণ আমার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। আমার বাবা কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেননি এবং আমিও ওনার থেকে শিক্ষা নিয়েছি; আমিও দেব না। আমি ক্রিকেট শুরু করেছি ২০১০ সাল থেকে, এখন পর্যন্ত আমি খেলছি ২০২২ সাল, আল্লাহর রহমতে।
ক্রিকেট আমি প্রফেশন হিসেবে নিয়েছি ছোটবেলা থেকেই, আমার স্বপ্ন ছিল ন্যাশনাল টিমে খেলা এবং এখনো আমার আছে। আমি আমার ১০০% চেষ্টা করে যাব, বাকিটুকু জানি না। হয়তো আমার কপালে থাকবে কি না ন্যাশনাল টিমে খেলা। আমি কিন্তু বাংলাদেশের ডোমেস্টিক টুর্নামেন্টগুলো বিপিএল এবং অন্যান্য টুর্নামেন্টগুলো কোথাও খারাপ খেলিনি এবং আমি টপ পারফর্ম করেছি একটু আপনারা দেখেন তাহলে বুঝতে পারবেন। আমি আমার যোগ্য জায়গায় যেতে পারিনি।
ওই জায়গাগুলোতে কারা আছে একটু দেখুন তাহলে বুঝতে পারবেন। এখন তো আর আগের মতো ছোট নেই। আল্লাহর রহমতে ভালো ম্যাচিউরিটি হয়েছে। কিছুদিন পর আপনারাই তো বলবেন, ‘ওর তো বয়স হয়ে গেছে, ওকে আর খেলানো যাবে না!’ আসলেই যোগ্য মানুষগুলো যদি যোগ্য জায়গায় না থাকে, তাহলে ক্রিকেট কোনো দিন উন্নতি করবে না।
আমি কারো নাম মেনশন করছি না; এবং আমি ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই যে তারা আমাকে ২০১০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। তার পরও আমার একটা স্বপ্ন জাতীয় দলে খেলার। সেই স্বপ্নটা আমার আদৌ পূরণ হবে কি না আমি জানি না। যাই হোক, কিছুদিন আগের কথা; আমি ক্রিকেট বোর্ডের একজন নির্বাচককে ফোন করেছিলাম অন্য কিছু জানার জন্য।
উনি আমাকে ফোন করে বললেন, বাংলাদেশ ‘এ’ দলে যোগ দিতে। আগামীকাল থেকে অনুশীলন শুরু হবে। তার পরদিন দেখলাম যে প্র্যাকটিস শুরু হয়ে গেল, কিন্তু আমি নাই! আমি তো ওনাকে ফোন দিতেই পারি। ওনাকে ফোন করলাম। কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ বার ফোন করেছি, ধরে নাই। তারপর আমি মেসেজ দিলাম। মেসেজ সিন করে রিপ্লাই দেয়নি। এখন আপনারাই বলুন, ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা কিভাবে থাকবে?
তার পরও ক্রিকেট খেলে যাচ্ছি এটার জন্য যে আমার ফ্যামিলি থেকে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। আপনি যখন ভালো অবস্থানে থাকবেন, তখন সবাই আপনার পাশে থাকবে। আর যখন আপনি ভালো অবস্থানে থাকবেন না, আপনাকে অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে হবে। এবং সেটা আমি এখন ভোগ করছি। ক্রিকেটটা আসলে কি মাঝে মাঝে হতাশা সৃষ্টি করে কি না…। আর আমি প্রফেশন হিসেবে নিয়েছি ক্রিকেট। আমি খেলব। এটাই এখন আমার প্রফেশন। এটা আমি ছাড়তে পারব না। যত দিন আমি ভালো খেলব, তত দিনই খেলে যাব ইনশাআল্লাহ।’