যে এমপিরা এবার আ. লীগের মনোনয়ন পাবেন না

আগামী জাতীয় নির্বাচনে অজনপ্রিয় এমপিদের বাদ দিয়ে সেরা প্রার্থী খুঁজে বের করতে বেশ কয়েকটি জরিপ চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের বেশ কয়েকজন নেতা বলছেন, সম্প্রতি পাঁচ সিটি নির্বাচনে দেওয়া মনোনয়ন এই ব্যাপারে একটি উদাহরণ হিসেবে কাজ করছে।

কারণ দলের সভাপতি আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গাজীপুর ও বরিশালে বর্তমান মেয়রদের বাদ দিয়ে নতুন দুই মুখকে মনোনয়ন দিয়েছেন।তারা বলছেন, বরিশালের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ (শেখ হাসিনার ভাতিজা) এবং গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দলের বদনাম করায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

দলটির নেতারা বলছেন, সিটি নির্বাচনের মনোনয়নের মাধ্যমে দলের সভাপতি মূলত কারও মনোনয়নই যে নিশ্চিত নয় এই বার্তা দিতে চেয়েছেন।তারা বলছেন, আগামী নির্বাচনে মানুষের জন্য কাজ করেন, দল এবং নিজ নির্বাচনী এলাকায় জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন ব্যক্তিরাই নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার টিকিট পাবেন।

গত সপ্তাহে দলের এক যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলা এবং তৃণমূলে গ্রুপিং বন্ধ করতে বলেছেন।

তিনি বলেন, আমি মনোনয়ন দেবো। সুতরাং একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা বন্ধ করুন। নিজ এলাকায় গিয়ে কাজ করুন এবং সরকারের সাফল্যের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরুন।আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিভিন্ন অপকর্ম ও অন্যান্যভাবে দলের বদনাম করা কিছু মন্ত্রী ও এমপিকে মনোনয়ন দেওয়া নাও হতে পারে।



নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকৃত অবস্থা জানতে বেশ কয়েকটি জরিপ চালাচ্ছেন। দলের বদনাম করা ও অজনপ্রিয় এমপিরা হয়ত বাদ পড়তে পারেন।

দলীয় সূত্র বলছে, বেশ কয়েকজন এমপি বিভিন্ন কুকর্মে লিপ্ত হয়েছেন। এ ছাড়া তারা স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তৃণমূল নেতা ও নিবেদিত কর্মীদের কাছ থেকে দূরে সরে গেছেন।ওই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, দল সেসব যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে, মানুষের মধ্যে যাদের গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং সৎ ও নিবেদিত।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি কিছু দেশি-বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে জরিপ চালাচ্ছেন। নেতারা বলছেন, দলের সভাপতি ইতোমধ্যে বলেছেন, জরিপের ভিত্তিতেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আগামী নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জিং উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ইতোমধ্যেই দলের নেতাদের নিয়মিত নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করতে এবং নিজেদের সক্ষমতা দিয়ে ভোটের বাধা অতিক্রম করতে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রত্যেক সংসদ সদস্যের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এবার শুধু চেহারা দেখে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। যারা নিজ এলাকায় যোগ্য ও জনপ্রিয় তাদেরই কেবল মনোনয়ন দেওয়া হবে।

আগামী বছরের জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। কমিশন বলছে, তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।

যদিও ইসির আশ্বাস সত্ত্বেও বিএনপিসহ কয়েকটি বিরোধী দল বর্তমান ইসি এবং সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে বলছে। তারা সরকারকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বাতিল করা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান পুনর্বহালের জন্য আহ্বান জানিয়েছে।