
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে করে সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা। অলরাউন্ড পারফর্ম করেও পরাজয়ের স্বাদ নিতে হয়েছে বাংলাদেশের আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদী হাসান মিরাজকে।
জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। লুঙ্গি এনগিডির বলে নিজের জন্মদিনে অধিনায়ক তামিম ইকবাল ‘সারপ্রাইজড’ হয়ে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন দলীয় ৭ রানে। তামিমের অনুসরণ করে টপ ও মিডল অর্ডারের চার ব্যাটারও দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন। ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
ষষ্ঠ উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে দুই অঙ্কে গুঁটিয়ে যাওয়ার লজ্জা থেকে বাঁচান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। রিয়াদকে শিকার করে এই জুটি ভাঙেন তাবরাইজ শামসি। ৪৪ বলে ২৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন রিয়াদ। সপ্তম উইকেটে আবারও বড় জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ের নায়ক আফিফ ও মেহেদী হাসান মিরাজ।
সপ্তম উইকেটে আফিফ ও মিরাজের জুটিতে আসে ৮৬ রান। চাপের মুখে ১০৭ বলে ৭২ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ। মিরাজ করেন ৪৯ বলে ৩৮ রান। তাদের দুইজনকেই একই ওভারে শিকার করেন কাগিসো রাবাদা। তারা দুইজন ফেরার পর আর বড় হয়নি বাংলাদেশের ইনিংস। নির্ধারিত ৫০ ওভারে টাইগাররা সংগ্রহ ৯ উইকেটে ১৯৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে রাবাদা পাঁচটি উইকেট শিকার করেছেন।
আফিফ ও মিরাজ লড়াকু সংগ্রহ এনে দেওয়ার পরও বোলারদের ব্যর্থতায় যেন ঢাল-তলোয়ারহীন হয়ে পড়ে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন ইয়ানেমান মালান ও কুইন্টন ডি কক। ৪০ বলে ২৬ রান করা মালানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের প্রথম উদযাপনের উপলক্ষ এনে দেন মিরাজ। উদ্বোধনী জুটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ৮৬ রান।
একদশ ওভারের মধ্যে দুটি রিভিউ হারায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের বলে কুইন্টন ডি ককের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে সফরকারীরা। একাদশ ওভারে মিরাজের বলে ইয়ানেমান মালানের বিপক্ষে এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ টাইগাররা।
ঝড়ের বেগে ব্যাটিং করে মাত্র ২৬ বলেই তুলে নেন অর্ধশতক। ১১তম ওভারের শেষ বলে ডি ককের ক্যাচ ছাড়েন উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিক। জীবন পাওয়া ডি কক থামেন ৬১ রানে। তার ৪২ বলের ঝড়ো ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে সাকিব আল হাসানের বলে আফিফের তালুবন্দী হয়ে।
দলকে জয়ের প্রান্তে রেখে আউট হন টেম্বা বাভুমা। প্রোটিয়া অধিনায়ককে শিকার করেন আফিফ। বাভুমার ব্যাট থেকে আসে ৫২ বলে ৩৭ রান। অপরদিকে, ৬২ বলে অর্ধশতক হাঁকান কাইল ভেরেইন। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করেন র্যাসি ফন ডার ডুসেন। বাংলাদেশের পক্ষে সাকিব ১০ ওভারে দুইটি মেডেন ওভারসহ ৩৩ রান খরচ করে শিকার করেন একটি উইকেট। মিরাজ ৫৬ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ ১৯৪/৯ (৫০ ওভার), আফিফ ৭২, মিরাজ ৩৮, রিয়াদ ২৫, লিটন ১৫, ইয়াসির ২, তামিম ১, সাকিব ০; রাবাদা ৫/৩৯, র্যাসি ১/৩, পারনেল ১/৬, শামসি ১/২৬, লুঙ্গি ১/৩৪। দক্ষিণ আফ্রিকা ১৯৫/৩ (৩৭.২ ওভার), ডি কক ৬১, ভেরেইন ৫৮*, বাভুমা ৩৭, মালান ২৬; সাকিব ১/৩৩, মিরাজ ১/৫৬। দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ উইকেটে জয়ী।
Leave a Reply