গুম-গ্রেপ্তার আতংকে জাহাঙ্গীর

আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বরখাস্ত হওয়া মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। তিনি ছাড়া তার মায়ের পক্ষেও মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এই নির্বাচন অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। দুর্নীতিমুক্ত সিটি করপোরেশন গঠনের নির্বাচন। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ার নির্বাচন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে স্মার্ট নগরী উপহার দিতে চাই।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘গাজীপুর নগরবাসী চায় একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সিটি করপোরেশন গঠিত হোক। আমি নির্বাচিত হলে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত জনকল্যাণমুখী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশনকে গড়ে তুলব।’

এক প্রশ্নের জবাবে আজমত উল্লা খান বলেন, এখানে যে কেউ প্রার্থী হতে পারেন। সিটি নির্বাচনের সব বিষয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। এখানে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কেউ প্রার্থী হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেবে।

বিকেল তিনটার দিকে সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এলাকার সাধারণ মানুষ এবং জাহাঙ্গীর আলম তার মায়ের পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তার মনোনয়নপত্র জমা দেন।

পরে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, কালকের পর হয়তো আমার পায়ে শিকল পরতে হতে পারে। আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। আমাকে গুম করতে পারে। আমি দেশবাসী ও নগরবাসীকে বলে যাই যদি আমার মৃত্যু হয় আপনারা বিশ্বাস করবেন আমি এই শহর রক্ষা করতে গিয়ে যা যা ভাল কাজ আছে আমি সব করেছি। হয়তোবা অনেকে পাওয়ারের কাছে মিথ্যাচার করতে পারে। অনেকে আমাকে ফাঁসিয়ে দিতে পারে। আমার বিরুদ্ধে অনেক কিছু করতে পারে।

তিনি বলেন, এই শহরের মানুষের ক্ষতি হয় এমন কিছু আমি করিনি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে কতিপয় মানুষ মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার এবং সাধারণ মানুষের ক্ষতি করা হয়েছে। এখানে একটা মিথ্যার জয় হয়েছে। সত্য এখানে পতন হয়েছে। এই মিথ্যাকে যারা সত্য বানিয়েছে আমি তাদেরও ভবিষ্যত বিচার চাই।

তিনি নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু, সুন্দর ভোট প্রত্যাশা করে বলেন, আমি এক ব্যক্তি দাঁড়িয়েছি। আজকে আমার কাছ থেকে সকল ছায়া সরে গেছে কিন্তু আল্লাহর ছায়া, মায়ের ছায়া, নগরবাসীর ছায়া এবং দেশের আপামর জনগণের ছায়া রয়েছে। এই নগরীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আমি যদি কোনো অন্যায় করে থাকি তাহলে এই শহরের মানুষ ভোটের মাধ্যমে বিচার করবে। আর যদি ভালো কিছু করে থাকে তাহলে অবশ্যই সত্যের জয় হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন থেকে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। যদি না আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। উপরে আল্লাহ আছেন নিচে গার্ডিয়ানরা আছেন, বিষয়টা তারা বুঝবেন। আমার মা এখানে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আমি মায়ের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি সর্বশেষ চেষ্টা করবো আমার মাকে রক্ষা করতে। কারণ আমার মা এই শহরটাকে রক্ষা করতে চেয়েছেন। মা যদি সন্তানের কাছে কিছু চায় বা বলে তবে সন্তান হিসেবে মাকে সেটা দেওয়ার জন্য আমি প্রস্তুত আছি। আমি সর্বশেষ পর্যন্ত আমার জীবনের ঝুঁকি যতটুকু আছে আমি শেষ পর্যন্ত এই শহরের মানুষকে নিয়ে লড়তে চাই।

জাহাঙ্গীর বলেন, ২০১৮ সালে আমি লাখ লাখ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম। আমার বিরুদ্ধে কী করা হয়েছে তা সকলেই জানেন। আমি যদি এই শহরের মানুষের উপকার করে থাকি তাহলে আমি নগরীর সকলের কাছে সহযোগিতা চাই। এই শহর রক্ষা করতে হবে। এই নগরকে ধ্বংস করার জন্য কিছু লোক পাঁয়তারা করছে। আমি এই শহেরর মানুষের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকব। নৌকা আমার আর্শিবাদ ছিল দোয়া ছিল। সেই নৌকার সম্মানের জন্য যা যা করার দরকার তাই করেছি। আমি নগরবাসীর কাছে দীর্ঘ তিন বছর পরীক্ষা দিয়েছি। যেহেতু নগরের মানুষের ভোট সিটি করপোরেশনের মানুষের ভোট তাই যাকে দিয়ে নগরের কাজ হবে তাকেই যেন নগরের মানুষ বেছে নেয়।