কন্যা সন্তানের বাবা হওয়ার চারদিন পর গণপিটুনিতে প্রাণ গেল সাবেক ছাত্রলীগ নেতার
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এক দল যুবক তাকে আটক করে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় আহত অবস্থায় নিয়ে আসে। এরপর থানায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের তত্বাবধানে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদ মারা যান।
মাসুদের বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বোয়ালিয়া থানার ওসি মাসুদ পারভেজ।
ছাত্র জীবনে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। আব্দুল্লাহ আল মাসুদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম রফিকুল ইসলাম। সপরিবার চাকরির সুবাদে তিনি নগরীর বিনোদপুরে থাকতেন।
এর আগে, ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে ক্লাসে যাওয়ার পথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হন আব্দুল্লাহ আল মাসুদ। এতে মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাম পা-ও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেটে দেওয়া হয়েছিল হাতের রগ। একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের সদস্যরা ওই হামলা চালায়।
এ হামলায় পা হারিয়ে মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। তার আরেকটি পা শনিবার রাতে ভেঙে দেওয়া হয়।
বোয়ালিয়া থানা হাজতে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাসুদ বলেন, ‘আমি বিনোদপুরে ওষুধ নিতে এসেছিলাম ভাই। আমি ছাত্রলীগ করতাম ওই জন্য ধরেছে। কিন্তু আমার পা ২০১৪ সালে কেটেছে ভাই। রগ-টগ সব কাটা ভাই। আমি তো অনেক দিন আগে থেকেই ছাত্রলীগ করা বাদ দিয়েছি ভাই।’
২০২৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে স্টোর অফিসার পদে তাকে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তত্বাবধায়ক সরকারের পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি।
শনিবার নবজাতক শিশুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মাসুদ লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তাআলার। গত ৩/৯/২০২৪ তারিখে কন্যা সন্তানের পিতা হয়েছি। মহান আল্লাহ তাআলার কাছে নেক হায়াত ও সুস্থতা কামনা করি। সকল আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্খী ও বন্ধু-বান্ধব এর কাছে আমার ও আমার মেয়ের জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।