
ইউক্রেনে যুদ্ধে উদ্ভূত মানবিক সংকট নিরসনে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ১৪০টি দেশ ভোট দেয়। ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে ভারত, পাকিস্তান, চীনসহ ৩৮টি সদস্য রাষ্ট্র।
জাতিসংঘের সদর দফতরে সাধারণ পরিষদের জরুরি অধিবেশনে এ প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে মধ্যপ্রাচ্যের আলোচিত দুই মার্কিন মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতও ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে। প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট পড়েছে রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, বেলারুশ, ইরিত্রিয়া ও সিরিয়াসহ পাঁচ দেশের।
আর এতে ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে বাংলাদেশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে শুরু থেকেই সোচ্চার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সংস্থা জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবারও ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অধিবেশনে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এতে ইউক্রেনের বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা এবং মানবিক সহায়তার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
একইসঙ্গে রুশ অভিযানের কারণে দেশটিতে সৃষ্ট ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির জন্য মস্কোর সমালোচনাও করা হয় জাতিসংঘে। এতে ইউক্রেনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রস্তাবের সমর্থনে ভোট দেয় বাংলাদেশসহ ১৪০টি দেশ। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে পাস হয় প্রস্তাবটি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে তা আগে থেকে অনুমান করা কঠিন।
তবে প্রতিনিয়ত যুদ্ধক্ষেত্রে সংঘাতের নানা খবর, হতাহতদের স্বজনদের বিলাপ, বাস্তুচ্যুতদের দুর্ভোগ, অর্থনৈতিক স্থবিরতা ভাবাচ্ছে সবাইকে। ফলে অব্যাহত রয়েছে সংকট সমাধানের চেষ্টাও। সেই চেষ্টা থেকে এর আগে চার দফায় বৈঠক হয়েছে মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে।
যদিও সেখান থেকে কোনো সমাধান আসেনি। এদিকে দুপক্ষের আলোচনার মধ্যেও ইউক্রেনের বিভিন্ন এলাকায় হামলা-সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনকে যুক্তরাজ্যের ছয় হাজার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সহায়তার ঘোষণায় আরও উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গন।
এমন পরিস্থিতিতে ব্রিটিশ প্রেসিডেন্ট বরিস জনসনকে ‘সবচেয়ে সক্রিয় রুশবিরোধী বিশ্বনেতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ক্রেমলিন। এরপর সুর পাল্টে কিছুটা নমনীয় গলায় বরিস বললেন, ঠিক রাশিয়া বা রুশ জনগণের বিপক্ষে নয়, শুধু ইউক্রেন-ইস্যুতে পুতিনের কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করছে ব্রিটেন।
এমন পরিস্থিতে রাশিয়ার গতি ঠিক কোনদিকে এগোবে তা হয়তো বলে দিতে পারেন শুধু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনই। যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান তোয়াক্কা না করে গত এক মাস ধরে কিয়েভসহ ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে অব্যাহত রয়েছে রুশ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ।
Leave a Reply